রক্ত যেমন একদিকে জীবন রক্ষা করে, অন্যদিকে সঠিকভাবে রক্তদাতা নির্বাচিত না করে রক্ত নিলে জীবন বিপন্নও হতে পারে। নিরাপদ রক্তের প্রাপ্যতা নির্ভর করে সঠিক রক্তদাতা নির্বাচন, নির্ভরযোগ্য স্ক্রিনিং ও রক্তের উপাদানের সঠিক ব্যবহারের ওপর।
বয়স ১৮-৬০ বছরের মধ্যে।
দৈহিক ও মানসিকভাবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে আগ্রহী।
ওজন ন্যূনতম ৪৫ কেজি বা ১০০ পাউন্ড।
নাড়ির গতি প্রতি মিনিটে ৬০-১০০–এর মধ্যে থাকে।
দেহের তাপমাত্রা অবশ্যই স্বাভাবিক অর্থাৎ ৯৯ দশমিক ৬ ফারেনহাইটের মধ্যে থাকতে হবে। অসুস্থ বা জ্বর অবস্থায় রক্ত দেওয়া যাবে না।
ওষুধ ব্যতীত রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রার মধ্যে (সিস্টোলিক ১০০ থেকে ১৬০ মিমি মার্কারি এবং ডায়াস্টোলিক ৬০ থেকে ১০০ মিমি মার্কারির নিচে) থাকতে হবে।
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ হতে হবে (পুরুষদের ক্ষেত্রে ১২ দশমিক ৫ গ্রাম/ডিএল এবং নারীদের ক্ষেত্রে ১১ দশমিক ৫ গ্রাম/ডিএল)।
ক্রনিক ডিজিজ যেমন উচ্চরক্তচাপ, হৃদ্রোগ, ফুসফুসের রোগ এবং যেকোনো জটিল রোগ থেকে মুক্ত থাকতে হবে।
যেসব রক্তদাতা অ্যাসপিরিন বা এনএসএইড সেবন করেছেন, তাঁদের অন্তত তিন দিন ওষুধ বন্ধ রেখে রক্তদান করতে হবে।
রক্তদাতা হেপাটাইটিস বি ও সি, ম্যালেরিয়া, এইচআইভি এবং সিফিলিসমুক্ত কি না, বাধ্যতামূলক স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
নিকট আত্মীয়দের রক্তদানে নিরুৎসাহিত করা হয়। এইচএলএ (হিউম্যান লিউকোসাইট অ্যান্টিজেন) সম্পর্কিত জটিলতার কারণে তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এমনকি জীবন সংশয়ও হতে পারে।
একজন সুস্থ, সবল মানুষ চার মাস পরপর রক্ত দিতে পারবেন।
নারীদের ক্ষেত্রে সাধারণত ছয় মাস পর রক্ত দিতে বলা হয়।
রক্তদানের ১ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে খাবার এবং অন্তত ৫০০ মিলি পানীয় গ্রহণ করুন। ক্ষুধার্ত অবস্থায় রক্তদান করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।
রক্তদানের পরের ২৪ ঘণ্টায় স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৪ গ্লাস পানি বেশি পান করবেন।
রক্তদানের পর ১০-১৫ মিনিট বিশ্রাম নেবেন।
রক্তদানের পর ঝুঁকিপূর্ণ ও ভারী কাজ যেমন গাড়ি চালানো, ব্যায়াম করা ইত্যাদি থেকে অন্তত একদিন বিরত থাকবেন।
রক্তদান–পরবর্তী কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ রক্ত সংগ্রহকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।
১. গর্ভকালীন ও প্রসব–পরবর্তী বা গর্ভপাতের পর ছয় মাস পর্যন্ত রক্ত দান করা যাবে না।
২. মায়েরা দুগ্ধদানের সময় রক্তদানে সাময়িক বিরত থাকবেন।
*অধ্যাপক সৈয়দা মাসুমা রহমান: পরামর্শক, নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS